ঘুমানোর মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিয়ে কর্মক্ষমতাও বাড়ে। তাই পরবর্তী দিনের শক্তি ও দক্ষতার অনেকটাই নির্ভর করে ব্যক্তির পর্যাপ্ত ঘুমের ওপর।
রাতে ঘুম না আসা বা আসলেও বারবার ভেঙ্গে যাওয়াকে বলা হয় ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা রোগ। যার ফলে দিনের বেলা ঘুমোনো, সারাদিন ঝিমুনি ভাব, কাজে মনোযোগ না দিতে পারা, সারাদিন মেজাজ খিটখিটে ও বিষণ্ণ হয়ে থাকার মত ঘটনা ঘটতে পারে।
১৫৩+ গবেষণা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ওজন বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে।
দীর্ঘদিন ঠিকমত ঘুম না হলে স্বাভাবিক আচরণ ও দৈনন্দিন কাজেকর্মে মারাত্মক প্রভাব পড়ে যা তাকে শর্ট টাইম মেমোরি লস থেকে শুরু করে হেলুসিনেশন, এমনকি মস্তিষ্ক বিকৃতির দিকেও নিয়ে যেতে পারে।
অনেকে ঘুমের সমস্যা দূর করতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে থাকেন। এটি স্বাস্থ্যকে আরও ক্ষতির দিকে ঠেলে দেয়। স্লিপিং পিল বা ঘুমের বড়ি খেয়ে ঘুমানোর প্রবণতা, একসময় অভ্যাসে পরিণত হয়। যার ফলে স্লিপিং পিল সেবন না করলে স্বাভাবিকভাবে আর ঘুম আসে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমের সমস্যায় দারুণ উপকারী উপাদান অশ্বগন্ধা
যাঁদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য সাইডএফেক্ট বিহীন কার্যকরী উপাদান অশ্বগন্ধা। অশ্বগন্ধা মনকে শান্ত করে, যা শরীরের কর্টিসলের মাত্রা কমায়। এতে ধীরে ধীরে গভীর ঘুম চলে আসে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সমৃদ্ধ উৎস হওয়ায় অশ্বগন্ধা একটি প্রকৃত বার্ধক্য প্রতিরোধী ভেষজ। এটি তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
এটি প্রমাণিত যে অশ্বগন্ধা শরীরে টেস্টোস্টেরনের পরিমান ও শুক্রানু সংখ্যা বাড়ায়। বিশেষ ক্ষমতা এবং ক্রিয়ার উন্নতি ঘটিয়ে নারী ও পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
মানসিক চাপ, অবসাদ ও দুশ্চিন্তা কমাতে এবং মানসিক চাপ সংক্রান্ত সমস্যা যেমনঃ উচ্চ–রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
যাঁদের ডায়াবেটিস সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য উপকারী অশ্বগন্ধা। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস দূরে রাখে এবং রক্তে শর্করা বাড়তে দেয় না।
অশ্বগন্ধা অসাধারণ রোগ প্রতিরোধী। সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে তোলে। এতে উপস্থিত ফাইটোকেমিক্যালস টিউমার কোষকে ধ্বংস করতে ভূমিকা রাখে।
হাড়কে শক্তিশালী রাখে, মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে, এবং পেশী বৃদ্ধির নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষণা থেকে জানা যায় যে, অশ্বগন্ধা ব্যবহার করলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
অশ্বগন্ধা সেবন পদ্ধতিঃ
রাতে ঘুমানোর ২ ঘণ্টা পূর্বে ১ চামচ অশ্বগন্ধা ১ কাপ কুসুম গরম পানি/দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে হবে। ডায়াবেটিস না থাকলে সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়া উত্তম।
শতভাগ প্রাকৃতিক হওয়ায় কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে এর অসাধারণ কার্যকারিতার জন্য গর্ভবতী নারী ও ৫ বছরের শিশুদের সেবন না করার পরামর্শ রইলো।
মাত্র ২ সপ্তাহ সেবনেই আশানুরূপ কার্যকারিতা টের পেয়েছেন অনেকে। তবে সর্বোত্তম ফলাফল পেতে নূন্যতম ৮ সপ্তাহ কন্টিনিউ করা উত্তম।।